সহসাই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার না কমানো সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন সামাজিক সুরক্ষার জন্যই সঞ্চয়পত্রের মুনাফাহার ব্যাংকের সুদহারের চেয়ে বেশি থাকা উচিত। ব্যাংকিংখাতের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে আর্থিকখাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যাংকিংখাতে সুশাসন নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারি প্রয়োজনে অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে কাজ করে জাতীয় সঞ্চয় পত্র অধিদপ্তর।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্র স্কীমের আওতায় ৫ বছর মেয়াদী আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর তিনমাস মেয়াদী স্কীমের মুনাফা ১০ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক শূন্য চার শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া পরিবার সঞ্চয়পত্র এবং পেনশন স্কীমে মুনাফার হার সাড়ে ৯ শতাংশের ওপরে। বিশ্লেষকরা সুদের এই হারকে যৌক্তিক বলেই মনে করেন।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ জানান, সঞ্চয়পত্রে সুদের হার ঢালাওভাবে কমানো ঠিক না। কারণ অবসরে যাওয়া লোকজন এবং যাদের আয় নাই বা যারা গৃহে আছেন বিশেষ করে নারীরা তাদেরকে সুবিধা দিতে হবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, সঞ্চয়পত্রে সুদের হার একটু বেশি দিতেই হবে, কারণ এটার ওপর অনেকেই নির্ভর করে। সঞ্চয় পত্রের সুদের হার বাড়ানো বা কমানোর সঙ্গে ব্যাংকের কোন সম্পর্ক নেই। অনেক বছর এমন হয়েছে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার যখন সর্বোচ্চ ছিলো সেবারও ব্যাংকে ডিপোজিটের পরিমাণ অনেক বেড়েছে বলেও জানান সাবেক এই গভর্নর।
গেল অর্থবছরে ৭৮ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে সরকার। মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান নির্বাচনের আগে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হবেনা।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে নজরদারির তাগিদ দিলেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ জানান, সঞ্চয়পত্র যাদের জন্য বেশি হারে সুদ দিচ্ছে তারা কিন্তু কিনছেন না কিনছেন ধনী মানুষরা। সঞ্চয় পত্রের ফর্মে কিন্তু কোথাও জিজ্ঞেস করা হয়না ক্রেতার আয় বা উপার্জন কোন গ্রুপের আওতায় পড়ে।
আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, যারা সঞ্চয় পত্র কিনতে যান তাদের কাছে সম্পদের বিবরণ এবং প্রক্রিয়াটাকে আরও সুসংগঠিত করার পরামর্শ দেন। কিন্তু সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর বিপক্ষেই মত সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এর আগে ২০১৫ সালে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১৩ শতাংশ থেকে প্রায় ২ শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ১১ শতাংশে নামিয়ে আনে বর্তমান সরকার।